আমার সিলেট
অপরাধ
১ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

হাজার কোটি টাকার লুটপাটে মনিরুল সিন্ডিকেটের সম্পৃক্ততার প্রমাণ মিলেছে

Md. Shaiduzzaman Sujan
ঢাকা
হাজার কোটি টাকার লুটপাটে মনিরুল সিন্ডিকেটের সম্পৃক্ততার প্রমাণ মিলেছে

বাংলাদেশ পুলিশের স্পেশাল ব্রাঞ্চের (এসবি) সাবেক প্রধান মনিরুল ইসলামের নেতৃত্বাধীন একটি সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে এক হাজার কোটি টাকারও বেশি অর্থ আত্মসাতের প্রমাণ পাওয়া গেছে। অভিযোগ রয়েছে, রোহিঙ্গাদের সহায়তার নামে কয়েকটি এনজিও প্রতিষ্ঠা করে এই বিপুল অর্থ হাতিয়ে নেওয়া হয়েছে।

বাংলাদেশ পুলিশের স্পেশাল ব্রাঞ্চের (এসবি) সাবেক প্রধান এবং অতিরিক্ত আইজিপি মনিরুল ইসলামের নেতৃত্বে গঠিত একটি প্রভাবশালী সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে এক হাজার কোটি টাকারও বেশি অর্থ আত্মসাতের সুস্পষ্ট প্রমাণ পাওয়া গেছে। রোহিঙ্গা শরণার্থীদের সহায়তার নামে এনজিও প্রতিষ্ঠা করে বিদেশি দাতাদের অনুদান হাতিয়ে নেওয়ার মাধ্যমে এই অর্থ লুট করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

অনুসন্ধানে উঠে এসেছে, শুধু এনজিও নয়—ব্যক্তিগত ও ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের হিসাবেও বিপুল পরিমাণ টাকা লেনদেন হয়েছে। এই অর্থের উৎস একদিকে বিদেশি দাতা সংস্থা, অন্যদিকে ঘুষ ও দুর্নীতির মাধ্যমে উপার্জিত। এসব অর্থ আত্মসাতের পর বৈধতা দেওয়ার উদ্দেশ্যে তা স্থানান্তর করা হয়েছে পরিবারের সদস্যদের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে।

দুর্নীতির এই চক্রে সরাসরি জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে মনিরুল ইসলামের স্ত্রী, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সাবেক অতিরিক্ত সচিব সায়লা ফারজানা, তার শ্যালক রেজাউল আলম শাহীন, শ্যালিকার স্ত্রী সানজিদা খানম টুম্পা, শ্যালিকা সাদিয়া এবং টুম্পার ভাই দেলোয়ার হোসেনসহ পরিবারের একাধিক সদস্যের বিরুদ্ধে। তদন্তে দেখা গেছে, এই সিন্ডিকেটের মালিকানাধীন বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নামে এক হাজার কোটি টাকারও বেশি লেনদেনের রেকর্ড রয়েছে।

বিশেষ করে ‘কুয়েত সোসাইটি ফর রিলিফ’ এবং ‘শারজাহ চ্যারিটি ইন্টারন্যাশনাল’ নামের দুটি বিদেশি এনজিও থেকে আসা অনুদানের প্রায় ৯০০ কোটি টাকাও আত্মসাৎ করা হয়েছে বলে অনুসন্ধানে উঠে এসেছে।

এই সকল অনিয়ম ও দুর্নীতির তদন্তে ইতোমধ্যে মাঠে নেমেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। দুদক এবং ঢাকা পোস্টের যৌথ অনুসন্ধানে মনিরুল ইসলামের গত ১০ বছরে আর্থিক ও পেশাগত উত্থান এবং সংশ্লিষ্ট দুর্নীতির প্রাথমিক সত্যতাও পাওয়া গেছে।

চূড়ান্তভাবে, এই সিন্ডিকেট বিদেশি অনুদান, ঘুষ এবং দুর্নীতির মাধ্যমে উপার্জিত অর্থ আত্মসাৎ করে তা আত্মীয়-স্বজন ও ঘনিষ্ঠজনদের মাধ্যমে বিভিন্ন হিসাব ও প্রতিষ্ঠানে সরিয়ে নিয়েছে। যার পরিণতি—রাষ্ট্রীয় ও মানবিক সহায়তার নামে এক ভয়াবহ লুটপাটের দৃশ্যপট।

মতামত (0)