আমার সিলেট
ধর্ম
১৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

সূরা আন-নাস: অর্থ, তাৎপর্য ও শিক্ষা

নিজস্ব প্রতিবেদক
সূরা আন-নাস: অর্থ, তাৎপর্য ও শিক্ষা

সূরা আন-নাস পবিত্র কুরআনের শেষ সূরা। এটি মাক্কায় নাজিল হয়েছিল এবং এতে মোট ৬টি আয়াত রয়েছে। সূরাটিকে “মানুষের সূরা” বলা হয়, কারণ এতে আল্লাহর কাছে আশ্রয় চাওয়া হয়েছে বিশেষভাবে মানুষের জন্য। সূরা আন-নাস মূলত মানুষের অন্তরে প্রবেশ করা কুমন্ত্রণা, শয়তানের প্ররোচনা ও অশুভ শক্তির হাত থেকে সুরক্ষা প্রার্থনার দোয়া।


সূরা আন-নাস (আরবি)

بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَٰنِ الرَّحِيمِ

١. قُلْ أَعُوذُ بِرَبِّ النَّاسِ
٢. مَلِكِ النَّاسِ
٣. إِلَٰهِ النَّاسِ
٤. مِن شَرِّ الْوَسْوَاسِ الْخَنَّاسِ
٥. الَّذِي يُوَسْوِسُ فِي صُدُورِ النَّاسِ
٦. مِنَ الْجِنَّةِ وَالنَّاسِ


বাংলা উচ্চারণ

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম

১. কুল আউযু বি-রাব্বিন নাস
২. মালিকিন নাস
৩. ইলাহিন নাস
৪. মিন শাররিল ওয়াসওয়াসিল খান-নাস
৫. আল্লাযি ইউওয়াসউইসু ফি সুদূরিন নাস
৬. মিনাল জিন্নাতি ওয়ান নাস


বাংলা অনুবাদ

আল্লাহর নামে শুরু করছি যিনি পরম করুণাময়, অতি দয়ালু।

১. বলুন, আমি আশ্রয় নিচ্ছি মানুষের প্রতিপালকের।
২. মানুষের সম্রাটের।
৩. মানুষের ইলাহর।
৪. গুপ্ত কুমন্ত্রণা দানকারীর অনিষ্ট থেকে।
৫. যে মানুষের অন্তরে কুমন্ত্রণা দেয়।
৬. সেটা জিন হোক বা মানুষ।


সূরা আন-নাসের তাৎপর্য

  • এ সূরায় আল্লাহ তাআলার তিনটি বিশেষ গুণ উল্লেখ করা হয়েছে: রব্ব (প্রতিপালক), মালিক (সম্রাট/শাসক), ইলাহ (উপাস্য)।

  • মানুষকে শেখানো হয়েছে যে, একমাত্র আল্লাহই আমাদের সুরক্ষাকারী।

  • শয়তান ও মানুষের অন্তরে কুমন্ত্রণা দেওয়া অশুভ শক্তি থেকে বাঁচার একমাত্র উপায় আল্লাহর কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করা।

  • এটি একটি দোয়ার মতো সূরা, যা মুসলমানদের মনে করিয়ে দেয়—সব ধরনের অশুভ চিন্তা, প্ররোচনা ও পাপাচার থেকে রক্ষা পেতে আমাদের সর্বদা আল্লাহর সাহায্য প্রার্থনা করতে হবে।


শিক্ষণীয় দিক

১. আল্লাহ ছাড়া আর কারও কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করা যায় না।
২. শয়তানের কুমন্ত্রণা সবসময় মানুষের অন্তরে আসে, তাই সর্বদা সজাগ থাকতে হবে।
৩. কুরআনের শেষ দুটি সূরা (সূরা ফালাক ও সূরা নাস) ‘মুআওয়িজাতাইন’ নামে পরিচিত—এগুলো প্রতিদিন পড়লে দোয়া ও সুরক্ষা হিসেবে কাজ করে।
৪. এই সূরা নিয়মিত পাঠ করলে মানুষ মানসিক অশান্তি, খারাপ চিন্তা ও কুমন্ত্রণা থেকে নিরাপদ থাকে।


উপসংহার:
সূরা আন-নাস শুধু কুরআনের একটি সূরা নয়, বরং এটি একটি শক্তিশালী দোয়া। প্রতিদিন সকাল-সন্ধ্যায় এই সূরা পাঠ করা আমাদের জীবনে মানসিক প্রশান্তি আনে এবং অশুভ শক্তির হাত থেকে সুরক্ষা দেয়।

মতামত (0)