সিলেট-১ আসনে মাওলানা হাবিবুর রহমানকে নিয়ে পুত্রের আবেগঘন স্ট্যাটাস—রাজনৈতিক অঙ্গনে তোলপাড়!

সিলেট–১ (সদর ও নগর) আসনে জামায়াতে ইসলামী মনোনীত সংসদ সদস্য প্রার্থী মাওলানা হাবিবুর রহমানকে নিয়ে তার সন্তান সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি আবেগঘন স্ট্যাটাস দিয়েছেন, যা স্থানীয় রাজনৈতিক অঙ্গনে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে। স্ট্যাটাসে তিনি বাবার ব্যক্তিগত, সামাজিক ও রাজনৈতিক পথচলার বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন।
ছেলের বক্তব্য----
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ।
সম্মানিত সিলেট-১ (সদর ও নগর) বাসী।
জনাব Moulana Habibur Rahman আমার সম্মানিত পিতা। কিছু বাস্তবতার আলোকে আমি আজ আপনাদের উদ্দেশ্যে কিছু লিখছি।
প্রিয় সিলেটবাসী,
তিনি হয়তো আপনাদেরকে আসমানের চাঁদ এনে দেওয়ার বা সমুদ্রের গভীর থেকে মণিমুক্তা এনে দেওয়ার প্রতিজ্ঞা করতে পারবেন না।
তবে আল্লাহ রাব্বুল আলামীন চাইলে তিনি আপনাদের জন্য কী করতে পারেন—তার অতীত জীবনের দিকে তাকালেই তা পরিষ্কার হয়ে যাবে।
খুব ছোটবেলায় বাবা–মা হারানোর পর থেকে নিজেকে গড়ে তোলার পাশাপাশি ভাইবোনদের দেখভাল করেই তিনি তার গঠনমূলক কার্যক্রমের যাত্রা শুরু করেন। পড়ালেখার পাশাপাশি দায়িত্ববোধকে কখনোই অবহেলা করেননি।
নেতৃত্বের সূচনা সিলেট আলিয়া মাদরাসায় ভিপি নির্বাচিত হওয়ার মধ্য দিয়েই।
কর্মজীবনের শুরু শিক্ষকতার মতো মহান পেশা দিয়ে। শিক্ষকতা করেছেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা করেছেন। ব্যক্তিগত ও সাংগঠনিকভাবে সংযুক্ত আছেন অসংখ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সাথে। দি সিলেট ইসলামিক সোসাইটি, দি সিলেট ফাউন্ডেশন, সাউথ সিলেট ওয়েলফেয়ার সোসাইটি—এসব সংস্থার সাথে তিনি ওতপ্রোতভাবে সম্পর্কিত।
সচেতন নাগরিক হিসেবে সিলেটের সবচেয়ে পুরনো পত্রিকা “জালালাবাদ”-এর পরিচালনা পরিষদে আছেন। ছিলেন সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক।
আবাসন সংকটে ব্যক্তিগত উদ্যোগে একটি সম্পূর্ণ আবাসিক এলাকা—সবুজবাগ আবাসিক এলাকা—গড়ে তোলার নজির সৃষ্টি করেছেন। সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো—সর্বশেষ জরিপের সময় তিনি নিজ উদ্যোগে সবুজবাগের মেইন রোড সরকারি মালিকানায় হস্তান্তর করেছেন, যার পুরোটা ছিল তার নিজ নামে।
নিজ পাড়ার মসজিদের মোতাওয়াল্লি ছিলেন দীর্ঘদিন। ব্যস্ততার কারণে ফজর ছাড়া অন্যান্য ওয়াক্তে বাইরে নামাজ পড়তে হতো—তাই পঞ্চায়েতকে অনুরোধ করে অব্যাহতি নেন।
এমন কোনো দুর্যোগ নেই—যেখানে তিনি ব্যক্তিগতভাবে, সাংগঠনিকভাবে অথবা নিজ প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে সর্বোচ্চ সহযোগিতায় এগিয়ে আসেননি।
তিনি একজন সফল উদ্যোক্তা। প্রতিষ্ঠা করেছেন—
• সিলেটের সবচেয়ে বড় সবজি মার্কেট “সিলেট ট্রেড সেন্টার”
• সিলেটের প্রথম আধুনিক রেস্টুরেন্ট “হামাদান”
• সিলেটের প্রথম কোল্ড স্টোরেজ কোম্পানি “ইউনিপেক্স”
এবং আরও অনেক প্রতিষ্ঠান।
চিকিৎসা ক্ষেত্রে রেখেছেন অসামান্য অবদান—সিলেটের সবচেয়ে বেশি রোগীসেবা প্রদানকারী প্রাইভেট হাসপাতাল ইবনে সিনা গড়ে তুলেছেন নিজের প্রচেষ্টায়। বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্টে ভাইস-চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
রাজনৈতিক জীবন শুরু সিলেট আলিয়া মাদরাসা থেকে—শিবিরের সভাপতি ও ছাত্র সংসদের ভিপি ছিলেন। ১৯৮২ সালে জামায়াতে ইসলামীতে যোগদানের পর থেকে একদিনও তিনি নীরব ছিলেন না। মানুষের কল্যাণে ইসলামী আন্দোলনের কাজ কখনো থামাননি। ১৯৯৮ সাল থেকে কেন্দ্রীয় জামায়াতের মজলিসে শুরার সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
জনতার অধিকার আদায়ে ছিলেন সর্বদা অগ্রসৈনিক—
• সিলেট বিভাগ আন্দোলন
• স্বৈরাচার এরশাদ বিরোধী আন্দোলন
• তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলন
• শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার আন্দোলন
• শাবিপ্রবির নামকরণ বিরোধী আন্দোলন
• টিপাইমুখ বাঁধ নির্মাণ বিরোধী আন্দোলন
সবগুলোতে তিনি নেতৃত্ব দিয়েছেন অগ্রভাগে থেকে।
সর্বশেষ ২৪ জুলাই বিপ্লবে ছাত্রদের পাশে থেকে নিজের প্রতিষ্ঠানে বিনামূল্যে চিকিৎসাসহ নানাবিধ সহযোগিতা করেছেন।
১৯৯৯ সালে পুলিশের হাতে গ্রেফতার ও নির্যাতনের শিকার হন।
২০১০–২০২৪ স্বৈরাচার হাসিনার আমলে নজরবন্দী ছিলেন; ছিল দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা।
⸻
আজ তিনি আপনাদের সামনে সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী
একজন যিনি—
• পারিবারিক হক আদায় করেছেন
• মানুষ গড়ার কারিগর শিক্ষক হয়েছেন
• শিক্ষা, স্বাস্থ্য, অর্থনীতি—সব ক্ষেত্রেই রেখেছেন অবদান
• আবাসন সংকট সমাধানে অগ্রপথিক ছিলেন
• জনগণের দাবি আদায়ে রেখেছেন অনবদ্য ভূমিকা
চটকদার কথা বলে তিনি আপনাদের মোহিত করবেন না।
চমকপ্রদ বক্তৃতা দিয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করবেন না।
তিনি আপনাদেরকে নিয়ে বাস্তবতার আলোকে, নৈতিকতার শক্তিতে গড়ে তুলবেন এমন এক সিলেট—
যেখানে জনপ্রতিনিধি হবে জনগণের প্রকৃত সেবক।
যেখানে থাকবে না ক্ষমতাবাজদের বলয়, থাকবে না চাঁদাবাজ–সন্ত্রাসীদের দৌরাত্ম্য।
দুর্নীতি করবেন না—করতেও দেবেন না।
জনগণের ন্যায্য অধিকার আদায় করবেন জনগণেরই একজন হয়ে।
ইনশাআল্লাহ।
⸻
তাই আসুন—দাঁড়িপাল্লায় ভোট দিয়ে ইনসাফের ভিত্তিতে দেশ, জাতি ও সমাজকে এগিয়ে নেই।
