শাবিপ্রবিতে ২৮ বছর পর শাকসু নির্বাচনের ঘোষণা, ক্যাম্পাসজুড়ে উচ্ছ্বাস

দীর্ঘ ২৮ বছর অচল থাকার পর শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (শাকসু) নির্বাচন আয়োজনের উদ্যোগ নিয়েছে প্রশাসন।
গত রোববার (১৪ সেপ্টেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক এ এম সরওয়ারউদ্দিন চৌধুরী জানান, আগামী নভেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহে এ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। খবরটি ক্যাম্পাসে ছড়িয়ে পড়তেই শিক্ষার্থীদের মধ্যে সৃষ্টি হয়েছে উচ্ছ্বাস, উদ্দীপনা ও প্রাণবন্ত আলোচনা।
শিক্ষার্থীরা বলছেন, শাকসু তাদের মতামত ও নেতৃত্ব বিকাশের অন্যতম প্রধান প্ল্যাটফর্ম। এতদিন ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত থাকার পর নির্বাচনের সুযোগ মিলতে যাচ্ছে, যা ক্যাম্পাসজুড়ে নতুন প্রাণসঞ্চার করেছে। কে প্রার্থী হবেন, কোন সংগঠন কাকে সমর্থন দেবে—এসব প্রশ্ন এখন শিক্ষার্থীদের আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু।
ইতোমধ্যে বিভিন্ন ছাত্র সংগঠন সক্রিয় হয়ে উঠেছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম থেকে শুরু করে টঙের আড্ডা ও ক্লাসরুম—সবখানেই শাকসু নির্বাচনের আলোচনায় মুখর ক্যাম্পাস।
সমাজকর্ম বিভাগের শিক্ষার্থী আলী আব্বাস শাহিন বলেন, “শাকসু হলো শিক্ষার্থীদের কণ্ঠস্বর। এতদিন আমরা তা থেকে বঞ্চিত ছিলাম। এবার সুযোগ এসেছে, তাই আমরা প্রত্যাশা করি নিরপেক্ষ ও স্বচ্ছ নির্বাচন হবে।”
সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী ফয়সাল হোসেন বলেন, “শিক্ষার্থীরা আলোচনায় ভীষণ আগ্রহী। তবে প্রশাসনের প্রতি আহ্বান থাকবে—এ নির্বাচনে কোনো পক্ষপাতিত্ব যেন না হয়।”
ইংরেজি বিভাগের দেলোয়ার হাসান শিশিরের মতে, “দীর্ঘদিন পর গণতান্ত্রিক চর্চায় অংশ নিতে যাচ্ছি। এটা শিক্ষার্থীদের জন্য ইতিবাচক সুযোগ।”
ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের ছাত্রী সুলতানা আক্তার লুবনা বলেন, “শাকসু নির্বাচন শিক্ষার্থীদের বহুদিনের অধিকার আদায়ের দাবী। তবে আমাদের সতর্ক থাকতে হবে, যেন দান-খয়রাতের রাজনীতি ক্যাম্পাসে ফিরে না আসে।”
শিক্ষার্থী নেতারাও নির্বাচন নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। শাবিপ্রবি ছাত্রশিবিরের সেক্রেটারি মাসুদ রানা তুহিন বলেন, “শিক্ষার্থীদের অধিকার আদায়ের প্ল্যাটফর্ম পুনরায় চালু হবে। প্রশাসনের প্রতি দাবি—দলমতের উর্ধ্বে থেকে সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজন করা।”
শাবিপ্রবি ছাত্রদলের সভাপতি রাহাত জামান বলেন, “শাকসু শিক্ষার্থীদের নেতৃত্ব বিকাশের পরীক্ষাগার। প্রশাসনের উচিত সবার জন্য সমান সুযোগ নিশ্চিত করা।”
শিক্ষার্থীরা আশাবাদী, প্রশাসন নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক শাকসু নির্বাচন আয়োজনের মাধ্যমে তাদের গণতান্ত্রিক অধিকার ফিরিয়ে দেবে।
