মালয়েশিয়া সিন্ডিকেটে জড়িতদের বিরুদ্ধে সিআইডির মামলা প্রক্রিয়া শুরু, অভিযুক্তদের তালিকায় সাবেক মন্ত্রী-এমপি, সেনা কর্মকর্তা ও তাদের পরিবার

মালয়েশিয়ায় সিন্ডিকেটের মাধ্যমে কর্মী পাঠিয়ে অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে এবার মামলা করছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে এই মামলা অনুমোদন দিয়েছেন সংস্থাটির মহাপরিচালক। আজকালের মধ্যে বনানী থানায় মামলা দায়েরের কথা রয়েছে।
কারা আসামির তালিকায়
সিআইডির অনুমোদিত মামলার আসামির তালিকায় রয়েছেন ৩৩ জন। তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য—
রুহুল আমিন স্বপন, বায়রার সাবেক মহাসচিব ও ক্যাথারসিস ইন্টারন্যাশনালের কর্ণধার, যিনি সিন্ডিকেটের অন্যতম হোতা।
সাবেক এমপি নিজাম উদ্দিন হাজারী (স্নিগ্ধা ওভারসিস লিমিটেড)।
লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মাসুদ উদ্দিন চৌধুরী, তাঁর স্ত্রী জেসমিন মাসুদ ও মেয়ে তাসনিয়া মাসুদ (ফাইভএম ইন্টারন্যাশনাল ও ওয়ান প্লাস ওভারসিস)।
সাবেক এমপি বেনজীর আহমেদ (আহম্মেদ ইন্টারন্যাশনাল)।
সাবেক অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তাফা কামালের স্ত্রী কাশমেরী কামাল।
এছাড়া আরও একাধিক রিক্রুটিং এজেন্সির পরিচালক ও মালিকদের নামও আসামির তালিকায় অন্তর্ভুক্ত।
সম্পদ জব্দ ও অর্থ হাতানোর অভিযোগ
২০ আগস্ট আদালত রুহুল আমিন স্বপনের প্রায় ৫০০ কোটি টাকার সম্পদ জব্দ করেছেন।
বসুন্ধরা, উত্তরা ও বনানীতে তার নামে ২৩১ কাঠা জমি রয়েছে।
তদন্তে উঠে এসেছে, সিন্ডিকেট সংশ্লিষ্টরা অন্তত ১০০ কোটি টাকার বেশি অর্থ হাতিয়েছেন, যা আরও বাড়তে পারে।
কীভাবে অর্থ হাতানো হয়েছে
২০১৬ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত মাসুদ উদ্দিন চৌধুরীর এজেন্সি ফাইভএম ইন্টারন্যাশনালসহ সংশ্লিষ্টরা ৯,৩৭২ জন কর্মী মালয়েশিয়ায় পাঠান।
সরকার নির্ধারিত খরচ ছিল ৭৮,৯৯০ টাকা।
কিন্তু প্রতি কর্মীর কাছ থেকে আদায় করা হয় দেড় লাখ টাকা বা তার বেশি।
এর বাইরে আলাদা চার্জ:
পাসপোর্ট ফি ১০ হাজার টাকা
কভিড টেস্ট ১৭ হাজার টাকা
মেডিকেল ৬,৫০০ টাকা
পোশাক বাবদ ৩,০০০ টাকা
সিভিল সোসাইটির উদ্বেগ
অভিবাসন নিয়ে কাজ করা ২৩টি সংগঠন অভিযোগের পুনঃতদন্ত ও বিচারিক তদন্ত দাবি করেছে।
তারা বলেছে, সিন্ডিকেটের সঙ্গে জড়িতদের দায়মুক্তি দেওয়া হলে আবারও একই দুর্নীতি ঘটতে পারে।
বাংলাদেশ সিভিল সোসাইটি ফর মাইগ্রেন্টস (বিসিএসএম) জানিয়েছে, অতীতে জড়িতদের বিচার নিশ্চিত না হলে নতুনভাবে কর্মী শোষণের ঘটনা ঘটবে।