আমার সিলেট
অপরাধ
৩ অক্টোবর, ২০২৫

জকিগঞ্জে ব্যবসায়ী নোমান উদ্দিন হত্যা: ৪৮ ঘণ্টা পার হলেও লিখিত অভিযোগ নেই

নিজস্ব প্রতিবেদক
জকিগঞ্জ, সিলেট
১১
জকিগঞ্জে ব্যবসায়ী নোমান উদ্দিন হত্যা: ৪৮ ঘণ্টা পার হলেও লিখিত অভিযোগ নেই

সিলেটের জকিগঞ্জের কালিগঞ্জ বাজারের মুদি ব্যবসায়ী নোমান উদ্দিনের (৫০) লাশ উদ্ধারের ৪৮ ঘণ্টা পার হলেও শুক্রবার (৩ অক্টোবর) বিকেল পর্যন্ত থানায় কোনো লিখিত অভিযোগ দায়ের হয়নি।

মানিকপুর ইউনিয়নের পূর্ব মানিকপুর গ্রামের মৃত আব্দুল জব্বারের ছেলে নোমান উদ্দিন গত ২৯ সেপ্টেম্বর নিখোঁজ হন। ১ অক্টোবর বিকেলে শায়লা স্মৃতি হাসপাতালের পেছনের একটি ধানক্ষেত থেকে তাঁর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। পরে স্থানীয়রা ও স্বজনরা মরদেহ শনাক্ত করেন।

প্রায় ২০ বছর সৌদি আরবে প্রবাস জীবন কাটানোর পর নোমান উদ্দিন দুই বছর আগে দেশে ফিরে কালিগঞ্জ বাজারে মুদি ব্যবসা শুরু করেন। প্রবাসে থাকার সুবাদে তিনি উল্লেখযোগ্য সম্পদ অর্জন করেছিলেন। তবে তাঁর ছেলে সন্তান নেই, দুই মেয়ে রয়েছে। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, নোমান উদ্দিনের জায়গা-জমি নিয়ে পারিবারিক বিরোধ ছিল।

নিহতের শ্যালক হানিফ আহমদ সুমন জানান, ২৯ সেপ্টেম্বর সকাল ১০টার দিকে নোমান উদ্দিন বাড়ি থেকে বের হয়ে বাজারে দোকান খোলেন। সকাল ১১টার দিকে তিনি শায়লা স্মৃতি হাসপাতালে যান। এরপর থেকেই তিনি নিখোঁজ ছিলেন। সেদিনই তাঁর স্ত্রী মনোয়ারা বেগম থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন। পরে একটি অজ্ঞাত নম্বর থেকে দুই লাখ টাকা মুক্তিপণও দাবি করা হয়, তবে স্থানীয়রা এটিকে সন্দেহজনক মনে করছেন।

বুধবার মরদেহ উদ্ধারের পর পুলিশ সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠায়। বৃহস্পতিবার রাতে জানাজা শেষে তাঁর দাফন সম্পন্ন হয়। জানাজায় অংশ নেওয়া স্থানীয়রা হত্যার রহস্য উদঘাটন ও প্রকৃত আসামিদের গ্রেপ্তারের দাবি জানান। তারা প্রকাশ্যে অভিযোগ করেন, এ ঘটনায় নিহতের স্ত্রী মনোয়ারা বেগম, শ্যালক হানিফ আহমদ সুমনসহ পরিবারের কিছু সদস্য জড়িত থাকতে পারেন।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, নিহতের স্ত্রী মনোয়ারা বেগম, দুই মেয়ে মুন্নি ও তান্নি, শ্যালক হানিফ আহমদ সুমন, চাচাতো ভাই রিয়াজ উদ্দিন ও হাসপাতালের কেয়ারটেকার তেরা মিয়াসহ একাধিক ব্যক্তিকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে।

এলাকার মানুষের অভিযোগ, পরিকল্পিতভাবে নোমান উদ্দিনকে হত্যা করা হয়েছে। পরিবারের ভেতরের বিরোধ, সম্পত্তি ভাগাভাগি ও মুক্তিপণের নাটককে কেন্দ্র করে এ হত্যার পেছনে বড় ধরনের ষড়যন্ত্র লুকিয়ে থাকতে পারে।

জকিগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জহিরুল ইসলাম মুন্না বলেন, “ঘটনার পর থেকে নিহতের স্ত্রী, সন্তান, শ্যালক ও কয়েকজন নিকটাত্মীয়কে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। তদন্তে একাধিক দিক বিবেচনা করা হচ্ছে। তবে এখনো প্রকাশ করার মতো কোনো অগ্রগতি হয়নি।”

তিনি আরও বলেন, “এটিকে হত্যাকাণ্ড হিসেবেই দেখা হচ্ছে। জড়িতদের শনাক্তে পুলিশ সর্বাত্মক চেষ্টা চালাচ্ছে।”

জকিগঞ্জ
ব্যবসায়ী
হত্যাকাণ্ড
কালিগঞ্জ

মতামত (0)