ওসমানী মেডিকেলে দুর্নীতির মহোৎসব: দুদকের অভিযানে ৭ অনিয়ম উদঘাটন

সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগে অভিযান চালিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। বুধবার (১০ সেপ্টেম্বর) দুপুর সাড়ে ১২টা থেকে ঘণ্টাব্যাপী এই অভিযানে হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ড, ওয়াশরুম, রোগীদের খাবার পরিবেশনব্যবস্থা ও প্যাথলজি বিভাগ ঘুরে দেখেন দুদক কর্মকর্তারা।
দুদক সিলেট কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক জুয়েল মজুমদারের নেতৃত্বে অভিযানে প্রাথমিক তদন্তে ধরা পড়ে ৭টি বড় অনিয়ম। এগুলো হলো—
হাসপাতালজুড়ে মারাত্মক অপরিচ্ছন্নতা
আউটসোর্সিংয়ে অনিয়ম
২৬২ কর্মচারীর বেতন ৩ মাস ধরে আটকে রাখা
রোগীদের খাবার মেনুর চেয়ে কম দেওয়া
সরকারি ওষুধ বাইরে বিক্রি
প্রয়োজনীয় ওষুধ রোগীদের না দেওয়া
অ্যাম্বুলেন্সে অতিরিক্ত জ্বালানি খরচ দেখিয়ে প্রতিটি গাড়ি থেকে মাসে ১৮ হাজার টাকা করে হাতিয়ে নেওয়া
জুয়েল মজুমদার সাংবাদিকদের বলেন, “হাসপাতালের ওয়ার্ড ও টয়লেট এতটাই নোংরা যে রোগীর সঙ্গে থাকা স্বজনদেরও অসুস্থ হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। আমাদের আসার খবর পেয়ে তারা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কাজ শুরু করে।”
তিনি আরও জানান, আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে কর্মরত গরিব কর্মচারীদের কয়েক মাসের বেতন আটকে রাখা হয়। পরে ঘুষ ছাড়া টাকা দেওয়া হয় না। একইভাবে রোগীদের খাবার মেনুর চেয়ে কম দেওয়া ও সরকারি ওষুধ বাইরে বিক্রির অভিযোগও পাওয়া গেছে।
৯০০ শয্যার ওসমানী মেডিকেল সিলেট বিভাগের সবচেয়ে বড় হাসপাতাল। প্রতিদিন এখানে প্রায় ১ হাজার ৫০০ রোগী চিকিৎসা নেন। দীর্ঘদিন ধরে সেবার মান নিয়ে অভিযোগ থাকলেও এবার দুদকের অভিযানে তা স্পষ্টভাবে ধরা পড়ল।
দুদক জানিয়েছে, এসব অনিয়মের রেকর্ড সংগ্রহ করা হয়েছে। যাচাই–বাছাই শেষে প্রয়োজনীয় সুপারিশ করা হবে।